Your default Browser? Google Chrome or Microsoft Edge?

“The only time you are allowed to use Internet Explorer is when you’re downloading Chrome :3 ”

লাইনটার সাথে সকল কম্পিউটার গিক অবশ্যই রিলেট করতে পারবে। এমনই ছিল Google Chrome এর আধিপত্য। স্ট্যাটিসটিক্যালি বলতে গেলে প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যবহারকারীদের ডিফল্ট ব্রাউজার ছিল ক্রোম। তবে এবছর জানুয়ারিতে আপডেটের পর থেকে ধীরে ধীরে পারফরমেন্স, প্রাইভেসি, ইউজার ইন্টারফেজ সহ সকল দিক দিয়েই Microsoft Edge এখন ক্রোমকে ছাড়িয়ে গেছে । এজ এবং ক্রোমের মধ্যাকার ব্রাউজার যুদ্ধে কাকে আপনার বেছে নেয়া উচিত তাই জানবো আমরা এই আর্টিকেলে।

১। ইন্টারফেস

মাইক্রোসফট এজ এবং গুগল ক্রোমের ইউজার ইন্টারফেস দেখতে প্রায় একই। এমনকি কিবোর্ড শর্টকাট, বুকমার্ক, ফেভরিট, সেটিং প্যানেলেও তেমন কোন পার্থক্য পাওয়া যাবে না। ক্রোমের মত এজেও অটো ইমেইল সিঙ্ক অপশন চালু করা আছে। যার ফলে ক্রোমে সেভ করা সকল বুকমার্ক, ফেভরিট এজ থেকে এক্সেস পাওয়া যাবে। ইউজার ইন্টারফেজের এতটা মিলের কারণ ব্রাউজার দুটোই গুগলের তৈরি ওপেন সোর্স প্ল্যার্টফর্ম ক্রোমিয়াম ইঞ্জিনের উপর নির্মিত। তবে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে এজে ব্যবহার করা হয়েছে মাইক্রোসফটের Bing. তবে চাইলেই সেটিং থেকে গুগলকে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন করা যাবে।

২। পারফরমেন্স

র‍্যাম ইটার হিসেবে ক্রোমের কুখ্যাতি হয়তো সবার জানা। মাল্টিপল ট্যাব সেশনে র্যামের প্রচুর মেমরি ইউজ করে এবং সিপিইউ ইউজও অনেক বেশি ক্রোমে। যা কম্পিউটারের গতি অনেকটা কমিয়ে দেয়। ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে বড় নালিশ বোধহয় এটাই ছিল।

মাইক্রোসফট এজ এই ইস্যুতে অবশ্য এগিয়ে আছে। অপটিমাইজড র্যাম এবং সিপিইউ ইউজের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের স্মুথ সেবা দিতে সক্ষম।

উদাহরণ হিসেবে বলে রাখি — মোটামুটি কনফিগারেশনের পিসিতে ৭টা ট্যাবে ব্যবহারে ক্রোম যেখানে র্যামের প্রায় 1.8 GB এভেরেজে দখল করছে মাইক্রোসফট এজ সেখানে ব্যবহার করছে মাত্র 600 MB. (মেশিনের কনফিগারেশন, অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যারের ভার্সনভেদে ভিন্নতা আসতে পারে )

৩। প্রাইভেসি

মাইক্রোসফট এজে তিন স্তরের প্রাইভেসি সেটিং দেওয়া হয়েছে। বেসিক, ব্যালান্সড এবং স্ট্রিক্ট। ডিফল্ট অপশন হিসেবে আছে ব্যালান্সড। এর ফলে ফিশিং সাইটগুলো থেকে যেমন মুক্ত থাকা যাবে একই সাথে মুক্ত থাকা যাবে অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন থেকে। এছাড়াও Microsoft Defender SmartScreen ব্যবহার করে ক্ষতিকর ওয়েবসাইট এবং ম্যালিসিয়াস সফটওয়্যার থেকে আপনার কম্পিউটারকে নিরাপদ রাখতে পারবেন।

অন্যদিকে এজের স্ট্রিক্ট প্রাইভেসির কাছাকাছি যে ফিচার ক্রোমে রয়েছে তা হল blocking third-party cookies. যা ট্র্যাকার অথবা এড ব্লক করার কথা দিলেও businessinsider.com এর মতে ট্র্যাকারের উপর কোন প্রকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যার্থ। বিজ্ঞাপন এবং ম্যালিসিয়াস ওয়েবসাইট থেকে মুক্ত থাকার জন্য অতিরিক্ত এক্সটেনশন ব্যবহার করতে হয়।

৪। এক্সটেনশন

ক্রোম ব্যবহারের অন্যতম সুবিধা হল এর বিশাল সংখ্যাক এক্সটেনশন লাইব্রেরি। Web store এ ডেভেলপারদের তৈরি প্রচুর সংখ্যাক এক্সটেনশন, থিম রয়েছ। মাইক্রোসফট এজে এক্সটেশন সুবিধা পাওয়া যাবে Edge add-ons এ। যদিও এক্সটেনশনের প্রাচুর্যতায় পিছিয়ে আছে এজ। তবে স্বস্তির ব্যাপার এই যে আপনি চাইলেই গুগল ক্রোমের যেকোন জনপ্রিয় এক্সটেনশন এড করতে পারবেন।

৫। ফিচার

মাইক্রোসফট এজে বেশ কয়েকটি নতুন ফিচার এড করা হয়েছে যা ব্যবহারকারীদের অনেকখানি মুশকিল আসান করে দিতে পারে।

• Collections — ব্রাউজিং করার মাঝে যেকোন প্রকার লিংক, টেক্সট, পিকচার ব্যবহারকারীর পছন্দমত কালেকশনে সেভ করে রাখা যাবে এখানে। এবং পরবর্তীতে সেই কালেকশন শেয়ার করার সুবিধাও রয়েছে।

• Convert Webpage to Edge App — অসাধারাণ একটি মাত্রা যোগ করেছে Edge এর অনন্য এই ফিচারটি! যেকোন সাইটকে আপনার ডেস্কটপের আলাদা একটি অ্যাপ আকারে ব্যবহার করা যাবে। একই সাথে চাইলে অ্যাপটিকে টাস্কবারে পিন করে রাখা যাবে। এতে পরবর্তী সময় ব্রাউজার ওপেন না করেই টাস্কবার থেকে সাইটটিতে এক্সেস করা যাবে।

• Immersive Reader & Audible Website — অনলাইনে কোন আর্টিকেল পড়ার সময় আশেপাশে প্রচুর বিজ্ঞাপন এবং অন্যান্য পেজের লিংক পপ করে থাকে। Immersive Reading মুডে সেইসকল ডিস্ট্র্যাকশন থেকে মুক্ত থাকা যাবে এবং Audible Website এর মাধ্যমে আর্টিকেলটি পড়ে শোনানো হবে। শারীরিক-প্রতিবন্ধকতা যাদের আছে, Edge তাদের জন্য ভাল বন্ধু।

• এছাড়াও রয়েছে Vertical Tabs, Dark mode support, smart copy এর মত বেশ কিছু ফিচার।

আপাত সময়ের জন্য বলাই যায় যে ব্রাউজার যুদ্ধে মাইক্রোসফট এজ অনেকখানি এগিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত লিনাক্স বাদে বাকি সকল প্ল্যাটফর্ম যেমন এন্ড্রয়েড, IOS, MacOS এ ব্রাউজারটি ব্যবহার করা যাবে। লিনাক্স রিলিজের জন্যেও বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না আমাদের।

Windows 10 এর সর্বশেষ আপডেট থেকে মাইক্রোসফট এজ ক্রোমিয়াম ডিফল্ট ব্রাউজার হিসেবে ইন্সটল থাকবে। তাহলে আশা করাই যাচ্ছে যে নতুন করে উইন্ডোজ বুট করার পর তড়িঘড়ি করে ক্রোম ডাউনলোড না করলেও হবে।